ইসরাইলের বিমান হামলায় কাঁপছে ইয়েমেন
- By Jamini Roy --
- 11 January, 2025
ইসরাইলি বাহিনী সম্প্রতি ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও পশ্চিম উপকূলে বিমান হামলা চালিয়ে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এ হামলায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হুতিদের আক্রমণের পাল্টা জবাবে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
হুতিদের পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেল আল-মাশিরাহ জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী রাজধানী সানার হেজিয়াজ বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে একাধিকবার হামলা চালায়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ১৩ বার বোমা বর্ষণের ফলে এক কর্মীসহ তিনজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন। হামলার প্রভাবে আশপাশের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
হুতিদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই আক্রমণ ইয়েমেনের জনগণের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত ও নিষ্ঠুর পদক্ষেপ। তারা এটিকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
ইসরাইলি বাহিনী ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী হোদেইদাহতে অন্তত ছয়বার বিমান হামলা চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল সামরিক স্থাপনা এবং কৌশলগত স্থাপত্য। হুদেইদাহ ছাড়াও রাস ইসা বন্দর, যা ইয়েমেনের প্রধান তেল রপ্তানি টার্মিনাল হিসেবে পরিচিত, সেটিতেও হামলা চালানো হয়। একটি ব্রিটিশ নৌ নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, এই হামলা ইয়েমেনের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পরিকল্পিতভাবে চালানো হয়েছে।
হুতিরা পাল্টা আক্রমণে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায়। লোহিত সাগরের দক্ষিণে যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধবিমানবাহী জাহাজ তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। হুতিদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া জানিয়েছেন, এই জাহাজটি হুতিদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের আক্রমণের পর যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী পিছু হঠতে বাধ্য হয়।
২০২৩ সালে হামাস ও ইসরাইলের সংঘাত শুরুর পর থেকেই হুতিরা ইরানের সমর্থনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হুতিরা ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ইসরাইল ও হুতিদের মধ্যে এ ধরনের সংঘর্ষ মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আঞ্চলিক উত্তেজনা দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলতে পারে। ইসরাইল ও ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান এই সংঘর্ষে মানবিক সংকটও বাড়ছে।
ইসরাইলি বাহিনীর এই সাম্প্রতিক হামলা ইয়েমেনের অবকাঠামো এবং জনগণের জীবনে ধ্বংসের ছাপ রেখে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে সমাধানের আহ্বান জানানো হলেও পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।